অ্যাথলেটিক বিলবাওকে হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের সুপারকোপা জয়।

 অ্যাথলেটিক বিলবাওকে হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের সুপারকোপা জয়।

লেখকঃ কবির এম হোসেন 





আরও একটি শিরোপা রিয়াল মাদ্রিদের শোকেসে যোগ হলো। সৌদি আরবের বাদশা ফাহাদ স্টেডিয়ামে রিয়াল মাদ্রিদ জিতে নিল সুপার কোপা ডি স্প্যানা। অ্যাথলিক বিলবাওকে ২-০ গোলে পরাজিত করে খুব সহজেই ফাইনাল ম্যাচটি জিতল কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল মাদ্রিদ। গতকালের জয়ের মাধ্যমে ১৪তম বারের মত স্পানিশ সুপার কাপ জিতল লস ব্লাংঙ্কসরা। সৌদি আরবে আয়োজিত দুটি সুপার কোপা আসরের দুটিই জয়ের নজির গড়ল লুকা মড্রিচ, করিম বেনজামার রিয়াল মাদ্রিদ।


চলতি মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদ এমনিতেই দারুণ সাফল্যে আছে। লা লিগার পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে তাদের অবস্থান। আরো একটি লা লিগা শিরোপা জেতার সুবাতাস তারা যখন পাচ্ছে তখন তাদের ঘরে উঠল ’মিনি শিরোপা’ স্প্যানিশ সুপার কাপ। চার দলের এই ছোট্ট আসরে তাদের প্রথমেই বড় পরীক্ষা দিতে হয়েছে। সেমিফাইনালে তারা মোকাবেলা করেছে চিরপ্রতিদ্বন্দী বার্সেলোনার। জাভির দায়িত্ব নেওয়া বার্সা ভালই পরীক্ষা নিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদের। তবে কাতালানদের শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচটি অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত নিয়ে গেলেও ৩-২ গোলের পরাজয় বরণ করে বাড়ি ফিরে যেতে হয় পিকে-বুসকেটসদের। আর রিয়াল মাদ্রিদ পায় সুপার কাপের ফাইনালের টিকিট।



অ্যাথলেটিক বিলবাও এক অঘটনের সৃষ্টি করে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। গত মৌসুমের কোপা দেল রে’র ফাইনালিস্ট বিলবাও; সেমিফাইনালে পরাজিত করে ডিয়েগো সিমিওনের আতলেটিক মাদ্রিদকে। সুপার কোপার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বিলবাও পিছিয়ে থেকেও শেষ সময়ের দুই গোলে লুইস সুয়ারেজ- জো ফেলিক্সদের এক রাশ হতাশা উপহার দিয়ে টানা দ্বিতীয় বারের মত রিয়াল মাদ্রিদের সাথে সুপার কোপার ফাইনাল নিশ্চিত করে। এই রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়েই তারা গত মৌসুমে সুপার কোপা জিতেছিল। যদিও সেই ম্যাচটি হয়েছিল স্পেনের মাটিতে। 



উড়তে থাকা রিয়ালের সামনে পাহাড় সমান এক চাপ নিয়েই ফাইনাল খেলতে নেমেছিল অ্যাথলেটিক বিলবাও।ম্যাচের শুরু থেকেই রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণ ভাগ বিলবাওয়ের রক্ষণকে জেকে ধরে। বিলবাও গোলকিপার উনাই সিমনের কৃতিত্বে মাদ্রিদ মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরোর প্রথম দুটি প্রচেষ্টা বিফল হয়। তবে একের পর এক আক্রমণ শানতে থাকেন রিয়াল স্ট্রাইকার ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রদ্রিগো ও করিম বেনজামা।৩৮ মিনিটে রিয়াল স্ট্রাইকার রদ্রিগো বিলবাও রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের একের পর এক কাটিয়ে বল দেন রিয়াল মিডফিল্ডার লুকা মড্রিচের কাছে। মড্রিচ চলন্ত বলকে উড়ন্ত ভলি করে পাঠিয়ে দেন বিলবাওয়ের জালে। প্রথমার্ধে ১-০ গোলর লিড নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল।


দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও বিলবাও গোলকিপার ও রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। ৫১ মিনিটে রিয়াল অধিনায়ক করিম বেনজামার বিলবাও গোলবারে দিকে নেওয়া শট লাগে ডিফেন্ডার ইয়ারার হাতে। ভি এ আর চেকের মাধ্যমে পেনাল্টি পায় রিয়াল মাদ্রিদ। স্পটকিক থেকে ব্যাবধান দিগুন করেন করিম বেনজামা। ম্যাচের শেষ সময়ে এক নাটকীয় ঘটনা ঘটে। রিয়ালের গোলমুখে আক্রমণরত বিলবাও খেলোয়াড় রাউল গার্সিয়ার বল লাগে রিয়াল ডিফেন্ডার এডার মিলিতাওয়ের হাতে।ভি এ আর চেকের মাধ্যমে পেনাল্টি পায় বিলবাও আর মিলিতাওকে দেখানো হয় সরাসরি লাল কার্ড। তবে বেজিয়ান গোলকিপার থিবো কোর্তুয়ার বীরত্বে রিয়াল গোলবার সে যাত্রায়ও সুরক্ষিত তাকে। রাউল গার্সিয়র নেওয়া দুর্বল পেনাল্টি শট কোর্তুয়ার পায়ে লেগে ফির আসে। ফিরতি বল আর জালে জড়াতে পারনি বিলবাওয়ের খেলোয়াড়েরা। দুই অর্ধের দুই গোল রিয়ালকে জয়ের নোঙরে পৌছে দেয়।



রিয়াল মাদ্রিদের সামনে খুব একটা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি ইনাকি ইউলিয়ামস-নিকো ইউলিয়ামস ভ্রাতৃদ্বয়ের অ্যাথলেটিক বিলবাও। বিলবাও গোলকিপার উনাই সিমনকে ব্যস্ত রাত পার করতে হয়। রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের তঠস্থ থাকতে হয় রিয়ালের আক্রমণ সামলাতে।ইনাগো মার্তিনেজ ও ইয়ারা আলভারেজ শক্ত দেয়াল বানালেও তা ধোপে টিকেনি। ইউলিয়ামস ভায়েরাও সৌদি আরবের মরুময় মাটিতে খুব একটা কিছু করতে পারেননি।


রিয়াল মাদ্রিদের ‘সোনালী বুড়ো’ লুকা মড্রিচ ও করিম বেনজামার কাধে ভড় করে রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি মাদ্রিদে তার দ্বিতীয় যুগে প্রথম ছিরোপা জিতলেন। শুধু মাত্র লা লিগা ছাড়া মাদ্রিদের ডাগ আউটে বসে সব শিরোপা জেতার স্বাদ পেলেন ডন কার্লো। নতুন করে মাদ্রিদের দায়িত্ব নেওয়ার পর ভালই দলটিকে গুছিয়ে নিয়েছেন লা দেসিমার কারিগর। শিরোপার বিচারে স্প্যানিশ সুপার কোপা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও এটাকে বড় শিরোপা জেতার রিহার্সেল বলা যায়। সেই রিহার্সেলে ভালই করল বিশ্বের সফল ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ।

No comments

Auto Scroll Stop Scroll