রোনালদো ৪, মেসি ০
রোনালদো ৪, মেসি ০
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসি তর্কাতীতভাবে বর্তমান ফুটবল বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়।নিজ নিজ দেশ ও ক্লাবের হয়ে দুজনের অর্জন ঈর্ষণীয়। বর্তমান দলবদলের মৌসুমে তাদের নিয়ে আলোচনা ছিল সবচেয়ে বেশি। দুজনেই গড়েছেন নতুন ঠিকানা। নতুন ঠিকানায় একজন আলো ছড়ালেও অন্যজনে এখনো রয়ে গেছেন নিস্প্রভ।
অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ’নিজের ঘর’ ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে ফিরে এসছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ইউনাইটেডে ফিরে মাঠে নামতে খুব বেশি দেরি করেননি সিএর সেভেন। ১১ই সেপ্টম্বর ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে নিউক্যাসলের বিপক্ষে আবার লাল জার্সি গায়ে জড়ান ৩৬ বছর বয়স্ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ইউনাইটেড সমর্থকেরা তাকে টুপি খুলে বরণ করে নেন। সেই পুরনো রোনালদোকে দেখার আশায় পুরো ওল্ড ট্রাফোর্ড সমর্থকে একাকার হয়ে যায়।
সমর্থকদের খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ম্যাচের ৪৫ মিনিটে ইউনাইটেডের হয়ে দ্বিতীয়বার গোল করেন রোনালদো। পুরো ওল্ড ট্রাফোর্ড উল্লাসে ফেটে পরে। রোনালদো এই ম্যাচেই আবার তাদের তাদের গোল উপহার দেন। ম্যাচের ৬২ মিনিটে নিউক্যাসলের জালে দেন আরেক গোল। গোল করার পরেই তার সেই পরিচিত উৎযাপন। ভো দৌড় দিয়ে উপরে উঠে এক লাফ। ঠিক যেমনটি চেয়েছিল ইউনাইটেড ও রোনালদো সমর্থকেরা। নিউক্যাসলের বিপক্ষে ৪-১ গোলের বিপক্ষে জয়; এর চেয়ে মধুর পুনরাভিষেক হয়ত আর হতে পারতো না।
১৪ই সেপ্টম্বর আরো একটি অভিষেক হয় রোনালদোর । ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষেক। সুইজারল্যান্ডের দল ইয়ং বয়েজের বিপক্ষে তাদের মাঠে খেলতে নামে রেড ডেফিলসরা। আবারও রোনালদোর গোল দিয়েই শুরু। ১৩ মিনিটে গোল করে ম্যান ইউর হয়ে নতুন করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের গোলের হিসাব খোলেন পর্তুগিজ সুপারস্টার।
রোনালদো মানেই যেন গোল, সেটা তিঁনি যে দলের হয়ে খেলুন না কেন। দল বদলালেও তার গোল করার ধাঁর ও কৌশল যেন বিন্দু পরিমাণও বদলায়নি। প্রিমিয়ার লিগে ওয়েস্ট হামের বিপক্ষে খেলতে নামেন ইউনাইটেডের হয়ে তৃতীয় ম্যাচ। ইউনাইটেডের প্রতিটি ম্যাচের প্রথম গোল করা যেন নিয়মই বানিয়ে ফেলেছেন ক্রিস। ওয়েস্ট হামের বিপক্ষেও প্রথম গোলটি তাঁর। ইউনাইটেডের হয়ে তিন ম্যাচে ৪ গোল।ইউনাইটেড পায় এক নাটকীয় জয়। আর সিআর সেভন সমর্থকেরা তার গোল করার ক্ষমতায় দিনকে দিন আরো বেশি মুগ্ধ হতে থাকে।
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালেদো যখন গোলের ফুলঝুড়ি উপহার দিচ্ছেন তখন লিওনেল মেসি কিন্তু পিএসজির হয়ে এখনো শূণ্য হাতেই রয়েছেন। প্যাঁরিসের ক্লাবটির হয়ে ৩ ম্যাচ খেলে ফেললেও কোন গোলের দেখা পাননি ফুটবলের খুঁদে জাঁদুকর।
বার্সেলোনা কিংবদন্তি লিওনেল মেসি দলবদলেরর মাঝামাঝি সময়ে প্যাঁরিসে যোগ দিলেও তার মাঠে নামতে বেশ দেরি হয়। অফিশিয়াল নানা জটিলতা ও প্রশিক্ষণের ঘাটতি পুষিয়ে ২৯ আগস্ট পিএসজির জার্সি গায়ে মাঠে নামেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। লিগ ওয়ানের ম্যাচে স্টেডে ডি রাইমের বিপক্ষে অপেক্ষার অবসান ঘটে মেসি ভক্তদের । ম্যাচের ৬৬ মিনিটে নেইমারের বদলে মাঠে নামলেও গোলেও দেখা পাননি লিওনেল মেসি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ ক্লাব ব্রুজের বিপক্ষে শুরুর একাদশেই ছিলেন মেসি। মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেদের সমন্বয়ে এক শক্তিশালী অক্রমণ ভাগ মাঠে নামান পিএসজি বস মারিসিও পাচেত্তিনো। কিন্তু তিন জনেই হতাশ করেন পিএসজি সমর্থকদের। গোল করতে পারেননি তাদের কেউই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফ্রাঞ্চের ক্লাবটির হয়ে গোলের হিসাব-নিকাষও শুরু করতে পারেননি মেসি। পুঁচকে ব্রুজের বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে শুকনো মুখে ফিরে আসতে হয় মেসি-নেইমারদর।
১৯শে সেপ্টম্বরের এসাইনমেন্টটি ছিল ঘরের মাঠ প্রাঁক ডি প্রিন্সেসে। প্রতিপক্ষ ছিল অলিম্পিক লিঁও । লিগ ওয়ানের ম্যাচে আবারও শুরুর একাদশে লিওনেল মেসিকে মাঠে নামান পিএসজি কোচ। এবার আর রাইট উইঙ্গার নয়, এটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে তাকে মাঠে দেখে সমর্থকেরা। মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেদের সাথে আক্রমণে যোগ দেন মেসির স্বদেশী আনহেল দি মারিয়া। এত চেষ্টা আর নতুন নতুন কৌশল;কোনটাতেই কাজ আসছে না মেসি ও তার সতীর্থদের। আবারও প্রতিপক্ষের গোলবার খুঁজে পেতে ব্যর্থ লিওনেল মেসি। পিএসজির হয়ে তিন ম্যাচে কোন গোল করতে না পারায় তার সমর্থকদের মনে হয়ত হতাশা বিরাজ করছে। তবে মেসির গোল করার সক্ষমতা নিয়ে তাদের মাঝে কোন রকম সংশয় নেই।

No comments