🔴 ব্রেকিং:
ঢাকার নবাবগঞ্জে শিক্ষিকার আত্মহত্যা🌐সাউথ আফ্রিকা যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় সিংগাইরের যুবক নি হ ত🌐সিংগাইরের জামশায় গাড়ি চাপায় অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু🌐

হামেস নক্ষত্রের পতন

 হামেস নক্ষত্রের পতন




ক্লাব ক্যারিয়ারে কোথাও থিতু হতে পারলেন না কলম্বিয়ান সুপারস্টার হামেস রদ্রিগেজ। এক মৌসুমে ফ্রাঞ্চের ক্লাব মোনাকোতে তো পরের মৌসুমে স্পেনের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে।আবার এক মৌসুমে জার্মানির ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখেতো পরের মৌসেমে ইংল্যান্ডের  ক্লাব এভারটনে। এবার তিনি আবার ক্লাব বদলালেন। তার নতুন ঠিকানা ইউরোপের কোন ক্লাব নয় । তিনি যোগ দিলেন কাতারের ক্লাব আল রায়ানে। 



সময়টা ২০১৪। প্রতিবেশী দেশ ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৫টি গোল করে হামেস রদ্রিগেস জিতেছেন গোল্ডেন বুট। হামেস তখন ক্লাব পর্যায়ে ফ্রাঞ্চের ক্লাব মোনাকোতে খেলেন। বিশ্বকাপ শেষ করে হামেস যখন ফ্রাঞ্চে ফেরেন তখন এক সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞেস করলেন, বিশ্বের সেরা দুই ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ অথবা বার্সেলোনার কোন একটি যদি আপনাকে ডাকে তবে কোন ক্লাবটিকে আপনি বেছে নিবেন । হামেস হাঁসি মুখে উত্তর দিলেন-অবশ্যই রিয়াল মাদ্রিদ। 



হামেসের সেই প্রশ্নের উত্তর গেল রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লেরোন্তিনো পেরেজের কানে। বিশ্বকাপ মাতিয়ে হামেস তখন ফুটবল বিশ্বে সুপারস্টার। তাকে দলে ভেড়াতে পারলে পত্রপত্রিকায় অনেক লেখালেখি হবে, দলের মার্কেট প্রাইস আরো বেড়ে যাবে। আর ফুটবলে টাকার খেলা পেরেজের চেয়ে বেশি বুঝেন এমন মানুষ ইউরোপে খুব কম। সুতরাং ৮০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে হলেও মাদ্রিদে উড়িয়ে আনা হলো সুদর্শন হামেস রদ্রিগেজকে।


কার্লো আনচেলত্তি তখন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ। হামেসকে তার মনে ধরে গেল । মাদ্রিদের মধ্যমাঠে লুকা মড্রিচ, ক্যাসেমিরো, টরি ক্রুসদের সাথে হামেসও নিয়মিত হতে থাকল। তবে সে মৌসুমে আনচেলত্তির অধীনে কিছুই জিততে পারলোনা রিয়াল। কপাল পুড়লো আনচেলত্তির, চাকরি খোয়ালেন তিনি। সাথে কপাল পুড়লো তার প্রিয় শিষ্য হামেস রদ্রিগেসেরও। 


পরের মৌসুমে রাফা বেনিতেজ রিয়ালের কোচ হয়ে আসলেন। তবে তার অধীনে রিয়ালের বাজে ফর্মে মাত্র চার মাসের মাথায় তিনিও রিয়ালের প্রধান কোচ থেকে বরখাস্থ হলেন। রিয়াল ডাগআউটের দায়িত্ব নিলেন মাদ্রিদেরই ঘরের ছেলে, মাদ্রিদ কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান। হামেস মোটেও জিদারে পরিকল্পনায় ছিলেন না। মাদ্রিদের সাইডবেঞ্চ গরম করাই হয়ে উঠলো হামেস রদ্রিগেজের কাজ। 



এক মৌসুম বাদে কার্লো আনচেলত্তি আবার কোচিংয়ে ফিরে আসলেন। পেপ গার্দিওলা জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ণ মিউনিখ থেকে বিদায় নেওয়ার পর ডন কার্লো ক্লাবটির প্রধান প্রশিক্ষকের দায়িত্ব নেন। তিনি তার প্রিয় ছাত্র হামেসকে আবার তার ড্রেসিংরুমে ফিরিয়ে আনেন। দুই বছরের ধারে জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন হামেস রদ্রিগেস।



আনচেলত্তির সাথে হামেস মিউনিখে প্রথম মৌসুমটি দারুনভাবেই কাটান। হামেস ও আনচেলত্তির দ্বিতীয় মৌসুমে আবার কালো মেঘ নেমে আসে। বায়ার্ন মিউনিখ থেকে বরখাস্থ হন কার্লো আনচেলত্তি। আবারও হামেসের কপাল পুড়ে। মিউনিখে দুই মৌসুম ধারে কাটিয়ে আবার রিয়াল মাদ্রিদে ফেরেন হামেস রদ্রিগেজ। যদিও বাভারিয়ার ক্লাবটি তাকে স্থায়ীভাবে থাকার চুক্তির অফার দিয়েছিল। হামেস রিয়ালে ফেরাটাকেই বেশি ভালো মনে করেন।



হামেস রিয়াল ফিরলেও মাদ্রিদ কোচ জিদানের কাছে ব্রাত্য হয়েই রইলেন। নিয়মিত একাদশে থাকার সৌভাগ্য খুব কমই ছিল।রিয়াল এদিকে জিদানের অধীনে ইউরোপে তাদের রাজত্ব আরো শক্তিশালী ভাবে কায়েম করছে। সেই দলে হামেসের চেয়ে স্কিলফুল অনেক খেলোয়াড় ছিল, হামেসকে মূল না নিলেও জিদানকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি।



কার্লো আনচেলত্তি আবার লাইমলাইটে আসলেন। তিনি এবার কোচ হলেও ইংলিশ ক্লাব এভারটনের। এভারটনে এসে তিনি আবার তার ড্রেসিংরুমে ফিরিয়ে আনতে চাইলেন হামেস রদ্রিগেজকে। এভারটন বোর্ড তার অনুরোধে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে পাকাপাকি ভাবে নিয়ে আসলেন হামেসকে। আনচেলত্তির সাথে আবার সাক্ষাতে হামেস তার পুরনো সাফল্য ফিরে পাওয়ার আশা করলেন। তবে তার আসলে কপালটাই খারাপ। ২০২১-২২ মৌসুমে আনচেলত্তি এভারটন ছেড়ে আবার যোগ দিলেন রিয়াল মাদ্রিদে। হামেস যেখানে গিয়েছেন সেখানেই তার ঘর ভেঙে গিয়েছে। 


এভারটনের নতুন কোচ রাফা বেনিতেজ যখন বললেন-হামেস তার পরিকল্পনায় নেই তখন সে আবার ক্লাব পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিলেন। এবার আর্ ইউরোপের কোন ক্লাব নয়, নিয়মিত ফুটবল খেলার আশায় উড়াল দিয়েছেন কাতারে।

No comments

Auto Scroll Stop Scroll