হৃদয় কাহন।। লিখেছেন: ফরিদ খান।।

হৃদয় কাহন!







আশাহত হবার অনেক কারন থাকে। হৃদয় হরণের অনেক বিষয় থাকে। আপনি হয়ত সমাজের নানা অসঙ্গতি দেখে দেখে অভ্যস্থ হচ্ছেন। মনে মনে তৃপ্তির ঢেকর গিলে বলছেন আমার তাতে কি!  আমি তো ভালোই আছি।  কিন্তু শুধু আপনি ভালো থাকলে সমাজ পরিশুদ্ধ হয় না হবে না। সামগ্রিকভাবে ভালো থাকার নামই ভালো থাকা।

প্রকৃতি প্রকৃতির নিয়মে চলে। ১০ বছর বা তারও বেশি ঘূর্নায়ন প্রক্রিয়ায় প্রকৃতি সমাজের রুপ বদলে দেয়। একটা সময় ছিল যখন আমরা আমাদের বাবা দাদাদের বিভিন্ন গল্প শুনতাম আর নিজেরা তাদের মত হতে চাইতাম। তার পর আমাদের  ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালের  সময়টাতে আনন্দ বলতে বিটিভির সিনেমা নাটক নিয়েই পুরা জেনারেশন কাটিয়ে দিতাম।  এবং রাস্তা ঘাটে মটর সাইকেল তেমন দেখা যেতো না। এই সময়টাই ছিল টিনেজারদের বেটার সময়। কিন্তু এর পরের দশ বছর মোটামুটি ভালোই চলছিলো। তারা বড়দের সম্মান করতে জানত, রাস্তা ঘাটে সবার সাথে খুবই সুন্দর ব্যবহার দেখতে পেতাম।  কিন্তু এই যে বর্তমানে জেন জি ভার্শন আসছে  এদের নিয়ে কিছু কথা বলা দরকার মনে করছি। বাংলাদদেশে যখনই থ্রি জি ফোর জি ভার্সন আসলো তখন থেকেই সমাজে চেহারার পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম সারা রাত জেগে মোবাইল ফোন চালানো। এর পর দিন ভর মটর সাইকেল রেস করা।


বিশেষজ্ঞরা বলেন আঠারো বছরের আগে স্মার্ট ফোন আর আনলিমিটেড ইন্টারনেট থাকলে সেই সন্তানের কাছ থেকে আপনি খুব বেশি কিছু আশা করতে পারেন না।  এখন আপনাদের কাছে কথা গুলো অবান্তর মনে হতে পারে। কিন্তু আপনি নিজে একটু চিন্তা করে দেখেন আপনি যখন ছোট ছিলেন তখন কি আপনার স্মার্ট ফোন লেগেছিল? তাহলে আপনার বাচ্চার কেন লাগছে? আপনার কাছে  একটাই উত্তর আছে কোভিট ১৯ এর সময় স্কুলের এ্যাসাইনমেন্ট! কিন্তু এর ফলে আপনার বাচ্চার ধ্বংসের পথ সুগম করে দিয়েছেন। 

এবার আসি জেন জি মটর সাইকেলের প্রসঙ্গে। গতকাল গোলাইডাংগা গ্রামের একটি বাচ্চা মটর সাইকেল দূর্ঘটনায় মারা গিয়েছে।  বাচ্চাটার বয়স ছিল ১২ বছর। একটু চিন্তা করেন ১২ বছরের একটা বাচ্চা রাস্তায় যেখানে ঘন্টায় ৩০ কিলো গতিতে গাড়ি চালাবার কথা সেখানে ৭০ বা ৮০ গতিতে গাড়ি চালানো হয়ছে। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে  একটি দূর্ঘটনা।

এভাবে প্রতিদিন মটর সাইকেল দূর্ঘটনায় টিনেজাররা মারা যাচ্ছে। কিন্তু আমরা শুধু আপসোস করছি। আসলে কি আমাদের করার কিছুই নেই?  আমার আপনার বাড়ির আসে পাসেই দেখবেন কোন বাবার হয়ত  সংসার চালানোই হিমসিম খাচ্চে।  সেখানে তার টিনেজার ছেলে দাবি করে বসছে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকার মটর সাইকেল!. বাবার জান যায় যায় আর ছেলের বন্ধুদের কাছে মান যায় যায়! ফলে বাবা মা তার আদরের বাচ্চাকে বোঝাতে সক্ষম হন না।  তখন বাড়ির আসবাবপত্র,  তৈজসপত্র ভাঙ্গচুর শুরু হয়। বাধ্য হয়ে বাবার চোখের পানি গোপনে রেখে ছেলের শখ পুরোন করেন ধার দেনা করে। 

এটুকেই সেষ নয় ছেলে যখন গাড়ি ড্রাইভিং এ যায় পিক আপ অল্প থেকে আসতে আসতে বাড়তে থাকে। এখন আরও একটা বাজে ট্রেড শুরু হইছে গাড়ির লুকিং গ্লাস থাকলে আনস্মার্ট লাগে খুলে ফেলে। আবার সেলেন্চার কেটে ফেলে বিকট শব্দ না করে গাড়ি চালালে এলাকার মানুষ যদি চেয়ে না দেখে। তাই সেটাও কেটে ফেলে। বিকট শব্দে যখন চাপা রাস্তা দিয়ে বন্ধরা মিলে রেস করতে যায় তখনই নিজের সাথে নিরীহ পথচারীদেরও রক্ষা নেই।

এখন বলেন এই দায় কার? আমার আপনার আমাদের সকলের এবং দেশের।


যা করা যেতে পারে,,,,


১. গাড়ি চালানোর নিয়ম আছে যা কার্যকর করা প্রসাশনের  গাফলতি রক্ষ করা যায়।

২. বাবা মা ছোট অবস্থায়ই যদি অতি আদর আহ্ণাদ না করে পড়াশোনার প্রতি খেয়াল রাখতো। বাচ্চা কার সাথে মিশে তার খবর না রাখা। সন্ধ্যার পরে বাড়ি থেকে বের হতে না দেওয়া।


৩. আমি, আপনি সবাই মিলে তথা সমাজের সবাই মিলে ওদের সচেতনতার  ব্যবস্থা করা।  উচ্চ সাউন্ডে, ও অতিরিক্ত গতিতে  যেন গাড়ি চালাতে না পারে যুব সমাজকে তার ব্যবস্থা নেওয়া। এক এলাকার যুব সমাজ েকবার ব্যবস্থা নিলে অটোমেটিক অন্য এলাকায় তার প্রভাব পরবে।


পরিশেষে একটা সুন্দর সমাজ গড়ার লক্ষ্যে ার যেন কোন মায়ের কোল কালি না হয়।  মটরগাড়ি দূর্ঘনায় আর যেন কোন প্রাণ না যায় এই প্রাথনায়,,,,


ফরিদ খান

প্রভাষক ( হিসাববিজ্ঞান)

গোলাইডাংগা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কলেজ, সিংগাইর,  মানিকগঞ্জ।

No comments

Auto Scroll Stop Scroll